অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ২৭শে জুন ২০২৫ | ১৩ই আষাঢ় ১৪৩২


দুই সন্তানের সাফল্যে গর্বিত লালমোহনের শিক্ষক পিতা আল-আমিন বিশ্বাস


লালমোহন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৫শে মে ২০২৫ রাত ০৯:৫০

remove_red_eye

৫০



আকবর জুয়েল, লালমোহন: নিজের সাফল্যে মানুষ যতটা না গর্বিত হয়, তার চেয়েও অনেক বেশি গর্ব হয় সন্তানদের সাফল্যে। দুই ছেলে-মেয়েকে সাফল্যের পথ দেখাতে পেরে গর্বিত ভোলার লালমোহন উপজেলার মো. আল-আমিন বিশ্বাস নামে এক শিক্ষক বাবা। তিনি উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্বাস বাড়ির বাসিন্দা ও চরছকিনা দাখিল মাদরাসার সুপার। দুই ছেলে-মেয়েকে তার স্বপ্ন ছিল সন্তানরা ভালো মানুষ হবে। এজন্য তিনি সন্তানদের পড়ালেখার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। এতে সফলও হয়েছেন আল-আমিন বিশ্বাস। তার বড় ছেলে মো. তাহসিন বিশ্বাস বর্তমানে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে ব্যাচেলর অফ ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস-১০) বিভাগে অধ্যয়নরত। এ ছাড়া আল-আমিন বিশ্বাসের মেঝো মেয়ে হাবিবা আফরিন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এগ্রিকালচার বিভাগে এ বছর ভর্তি হয়েছেন।
জানা গেছে, শিক্ষক আল-আমিন বিশ্বাসের ছেলে মো. তাহসিন ও মেঝো মেয়ে হাবিবা আফরিন লালমোহন উপজেলার যুগোপযোগী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিল। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তাহসিন ১ম  শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে এসএসসি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। হাবিবা আফরিনও ১ম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। তারা ২ জনই পঞ্চম, অষ্টম, এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ সহ স্কলারশীপ অর্জন করেন। তাহসিন বর্তমানে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে অধ্যয়ন করলেও তার ভর্তির সুযোগ হয়েছিল কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। একইসঙ্গে হাবিবা আফরিন বর্তমানে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করলেও তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ছাড়া আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন। দুই সন্তান নিজেদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়ায় শিক্ষক বাবা আল-আমিনসহ পুরো পরিবার উচ্ছ্বসিত।
আল-আমিন বিশ্বাস বলেন, সন্তানদের নিয়ে আমার লক্ষ্যই ছিল তারা ভালোভাবে পড়ালেখা করে প্রকৃত মানুষ হবে। বর্তমানে আমার বড় ছেলে ও মেঝো মেয়ে দেশের দুইটি সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছে। তাদের এ পর্যন্ত আসতে সবচেয়ে বেশি অবদান তাদের মায়ের। আমি আর্থিক ও মানসিকভাবে তাদের সব সময়  সাপোর্ট দিয়েছি। এ ছাড়া আমার দুই সন্তানের এই সাফল্যের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিনসহ ওই প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষকরা। এই প্রতিষ্ঠানটি আমাদের প্রত্যন্ত এ অঞ্চলের জন্য একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে শিক্ষার্থীদের পছন্দ মতো তাদের ভবিষ্যতের লক্ষ্য নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী নিয়মিত তদারকি করেন প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। আমি একজন অভিভাবক হিসেবে সব সময় এই প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য কামনা করবো। কারণ তাদের সু-পরামর্শেই আজ আমার দুই সন্তান একটি সুন্দর ভবিষ্যতের পথে হাঁটছে।
হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন জানান, আল-আমিন বিশ্বাস একজন শিক্ষক হয়ে আমার প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা রেখেছেন। তার তিন সন্তানের মধ্যে একজন ছেলে ও দুইজন মেয়ে। তার ছেলে এখান এসএসসি ও মেঝো মেয়ে এইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। বর্তমানে তার ছোট মেয়েও আমাদের প্রতিষ্ঠানে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। আল-আমিন বিশ্বাসের সন্তানরা সত্যিই মেধাবী। তার যে দুই সন্তান বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেলে পড়ছে, তাদের আমরা কেবল প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছি। তা মেনে চলে এখন সুন্দর একটি ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। এ ছাড়া আমরা প্রতিটি শিক্ষার্থীকেই পড়ালেখার পাশাপাশি প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়তে নিরলসভাবে চেষ্টা করছি। আমাদের লক্ষ্য; এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে একজন সু-শিক্ষিত মানুষ হয়ে উঠবে। ভবিষ্যতে তারা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে ইনশাআল্লাহ।