বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫শে জুন ২০২৫ রাত ০৮:৪০
১২
গত রোববার থেকে ইসরায়েল ও ইরান একটি বিস্ফোরক যুদ্ধ থেকে একটি ভঙ্গুর শান্তিচুক্তির দিকে গিয়েছে। আপাতত যুদ্ধবিরতি কার্যকর আছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেটিকে বলেছেন ‘১২ দিনের যুদ্ধ’, সেটা শেষ হয়েছে, তবে আপাতত।
এই সময়ের মধ্যে ট্রাম্প, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ইরানের নেতারা সবাই দাবি করেছেন, যুদ্ধবিরতি তাদের শর্তেই হয়েছে।
তবে সত্যিটা কী? ইসরায়েল কী অর্জন করেছে? ইরান কি তার কৌশলগত স্থাপনাগুলো রক্ষা করতে পেরেছে? এই যুদ্ধবিরতি কি শান্তির পথ তৈরি করছে?
কীভাবে ঘটনাগুলো ঘটল?
শনিবার গভীর রাতে ইসরায়েলের অনুরোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের সরাসরি অংশ হয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা ফোর্দো, নাতানজ ও ইস্পাহানে হামলা চালায়। ট্রাম্পের ভাষায়, এগুলো ‘সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস’ করা হয়েছে।
এরপর সোমবার ইরান পাল্টা জবাব দেয়, কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এক দীর্ঘ ও ব্যাপক যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেয়।
তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষণা দেন, “ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে একটি সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়েছে”।
তিনি এটিকে বলেছিলেন “১২ দিনের যুদ্ধ… যা বছরের পর বছর চলতে পারত এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্য ধ্বংস করে দিতে পারত”।
কিন্তু যুদ্ধবিরতির চার ঘণ্টা পর, ইসরায়েল দাবি করে ইরান থেকে ছোড়া দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তাদের আকাশসীমায় ঢুকেছে (যদিও তা ভূপাতিত হয়)। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল তেহরানের কাছে একটি রাডার ঘাঁটি ধ্বংস করে।
ট্রাম্প এতে ক্ষুব্ধ হন। তিনি বলেন, “আমি খুবই অসন্তুষ্ট যে, ইসরায়েল আজ সকালে আক্রমণ করেছে। এরা এতদিন ধরে এত কঠিনভাবে লড়ছে যে, এখন নিজেরাও জানে না কী করছে। ”
ইরান অবশ্য দাবি করেছে, তারা কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়েনি। সকাল সাড়ে ১১ টায় যুদ্ধবিরতি আবার কার্যকর হয়। ট্রাম্প নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেন এবং লিখেন: “ইসরায়েল আর ইরানকে আক্রমণ করবে না। সব যুদ্ধবিমান ঘরে ফিরবে এবং ‘বন্ধুত্বসূচক প্লেন ওয়েভ’ করবে। কেউ আহত হবে না। যুদ্ধবিরতি কার্যকর। ”
ইসরায়েল কী অর্জন করল?
ইসরায়েল বহুদিন ধরেই বলে আসছে, ইরান তাদের অস্তিত্বের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। কিন্তু এর আগে তারা কখনোই তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সরাসরি হামলা চালায়নি।
১৩ জুন তারা সেই সীমারেখা অতিক্রম করে— নাতানজ ও ইস্পাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানে।
এর আগেও তারা সিরিয়া ও ইরাকের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করেছিল, কিন্তু এবার আরও দূরের, আরও জটিল একটি অভিযান সফলভাবে পরিচালনা করেছে।
তারা যুক্তরাষ্ট্রকেও একটি সীমিত সামরিক অভিযানে অংশ নিতে বাধ্য করতে পেরেছে— যা আগে কখনো ঘটেনি।
নেতানিয়াহু বলেন, “বিশ্বনেতারা আমাদের দৃঢ়তা ও সাফল্যে অভিভূত”।
ইসরায়েলের অভিযান ‘রাইজিং লায়ন’ পরিচালিত হয় এমন এক সময়ে যখন ইসরায়েল ইতোমধ্যে ইরানের আঞ্চলিক মিত্রদের (হুতি, হামাস, হিজবুল্লাহ) দুর্বল করে ফেলেছে।
ইরান কি তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি রক্ষা করতে পেরেছে?
ইসরায়েল ভূ-পৃষ্ঠে ক্ষতি করতে পেরেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে যে, তারা ভূগর্ভস্থ স্থাপনাও ধ্বংস করেছে।
কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো নিরপেক্ষ সংস্থা (যেমন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা-আইএইএ) নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনি আসলে ভেতরে কী ক্ষতি হয়েছে।
আইএইএ-এর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেন, “এই ধরনের বিস্ফোরণে সেন্ট্রিফিউজ যন্ত্রপাতি খুব ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে”।
তবে এখনও পর্যন্ত ৪০০ কেজি উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের অবস্থান সম্পর্কে কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।
ইরানের পারমাণবিক সংস্থা বলেছে, তারা এই ধ্বংসের জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল এবং কাজ চালিয়ে যাবে।
যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর উৎস নিয়ে বিতর্ক রয়ে গেছে। ইরান অস্বীকার করেছে, তাহলে কে ছুড়ল? ভুলবশত ছোড়া হয়েছিল কি না, সে প্রশ্নও উঠছে— যেমনটা ২০২১ সালে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছিল ইরান।
ইরানে আবার হামলার সম্ভাবনা কতটা?
ইসরায়েল ও ইরান আপাতত একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে, তবে সেটি স্থায়ী শান্তিচুক্তি নয়।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতে, সার্বিকভাবে দুটি সম্ভাব্য পথ সামনে রয়েছে।
প্রথমত, জাতিসংঘের নতুন করে পরিদর্শন শুরু হতে পারে এবং একটি নতুন চুক্তি হতে পারে, যা ২০১৫ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার করা জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশনের (জেসিপিওএ) মতো। এতে ইরান তার কর্মসূচির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ কিছুটা কমাতে পারবে। উল্লেখযোগ্য যে, এই চুক্তি থেকে ইরান নয়, ট্রাম্প প্রশাসনই সরে এসেছিল।
এই জায়গাতেই ইউরোপীয় দেশগুলো বড় ভূমিকা রাখতে পারে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি— এই তিন দেশ ২০ জুন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে বৈঠক করেছে। তাদের সঙ্গে ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কাল্লাস। এই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানে হামলা করতে বাধা দেওয়া। যদিও এই চেষ্টা ব্যর্থ হয়, তবুও ইউরোপ এখনো একটি ভারসাম্যপূর্ণ কূটনৈতিক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের শক্তিপ্রয়োগের বিপরীতে।
এথেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূরাজনীতি বিষয়ে প্রভাষক ইয়োআনিস কোটুলাস আল জাজিরাকে বলেন, “ইরান ইউরোপীয়দের কূটনীতিতে জড়াতে চাইবে, পারমাণবিক কর্মসূচিতে আরও পর্যবেক্ষণ ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে”।
তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র একটি শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি মেনে নিতে পারে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইতোমধ্যেই সেটি বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত ইরানে শাসনব্যবস্থা বদলানোর চেষ্টা করবে না। এখন ইউরোপই ইরানের একমাত্র কূটনৈতিক পথ। রাশিয়া নির্ভরযোগ্য নয়। ”
তবে অতীতে ইসরায়েল সবসময়ই ইরান ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে যেকোনো পারমাণবিক চুক্তিকে ঠেকানোর চেষ্টা করেছে এবং এবারও তারা সম্ভবত নতুন কোনো চুক্তি মেনে নেবে না।
আর প্রশ্ন হলো, ইরান কি আপস করতে রাজি হবে?
একদিকে যুক্তরাষ্ট্র আগের চুক্তি ভেঙেছে, সাম্প্রতিক আলোচনায় নিয়ম বদলেছে এবং এমন সময়েই ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করেছে— যখন তারা আলোচনায় বসার কথা বলছিল।
সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক আলি আনসারি আল জাজিরাকে বলেন, “এটা অনেকটা নির্ভর করে ইরানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ও তারা কীভাবে নিজেদের অবস্থান বদলাবে তার ওপর। তবে ইতোমধ্যেই দেশটির ভেতর থেকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধের দাবি উঠেছে। ”
তবে এখন পর্যন্ত ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। সোমবার ইরানের পার্লামেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি একটি বিল অনুমোদন করেছে, যাতে বলা হয়েছে, যদি এটি পার্লামেন্টে পাস হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থার সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে ট্রাম্প মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি আবার শুরু হতে দেবেন না।
যদি এই মূল বিরোধ থেকেই যায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়িয়ে নিয়ে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে আরেক দফা হামলা-পাল্টা হামলা হওয়া কেবল সময়ের ব্যাপার।
আশুরা ৬ জুলাই
বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালো ইরান
এইচএসসি ও সমমানের প্রথম দিনে অনুপস্থিত ২০ হাজার, বহিষ্কার ৪৩
ভোলায় কোস্ট গার্ডের উদ্যোগে তারুণ্যের উৎসব
ভোলায় নৌ বাহিনীর মাদক বিরোধী লিফলেট বিতরণ
দৌলতখানে ১০০ বস্তা চাল জব্দ আটক-১
তজুমদ্দিনে শম্ভুপুর দ: বিএনপি'র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
তজুমদ্দিনে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন
টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির ২৫ বছর পূর্তিতে ভোলায় ক্রিকেট কার্নিভাল উৎসব
ভোলায় ১১দিন ধরে নিখোঁজ চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বি, সন্ধান চায় পরিবার
ভোলায় পাঁচ সন্তানের জননীকে গলা কেটে হত্যা
ভোলায় বিষের বোতল নিয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকা
ভোলার ৪৩ এলাকা রেড জোন চিহ্নিত: আসছে লকডাউনের ঘোষনা
উৎসবের ঋতু হেমন্ত কাল
ভোলায় বাবা-মেয়ে করোনায় আক্রান্ত, ৪৫ বাড়ি লকডাউন
ভোলায় এবার কলেজ ছাত্র হত্যা, মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার
ভোলায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন করোনা রোগী: এলাকায় আতংক
ভোলায় কুপিয়ে হত্যা করে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই, আটক এক
ভোলার চরফ্যাশনে করোনা উপর্সগ নিয়ে এক নারীর মৃত্যু
ভোলায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত