অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ২৭শে জুন ২০২৫ | ১৩ই আষাঢ় ১৪৩২


ভোলায় দড়িতে বাঁধা শিশু কাওছারের জীবন!


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ই এপ্রিল ২০২২ ভোর ০৪:৪৭

remove_red_eye

৭৫২

জুয়েল সাহা বিকাশ II মোঃ কাওছার হোসেন বয়স ৭ বছর। মায়াবী চেহারা ও মূখে সুন্দর ফুটফুটে হাসি লেগে থাকে তার। চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই সে অসুস্থ্য। কিন্তু সত্যিটা হলো প্রায় ৩ বছর আগে এই সুন্দর ফুটফুটে শিশুটি মানসিক ভাবসম্য হারিয়েছে। যার কারণে শিশু কাওছার যত সময় জেগে থাকে তত সময়ই তার মা দড়ি দিয়ে পা বেঁধে রাখে। আর বাঁধ খুলে রাখলে সে অন্য কোথায় চলে যায়। আবার ঘরের আসবার পত্র ভেঙে ফেলে। এমন কি তাকে জামা-পেন্ট পড়ালে সেগুলে ছিড়ে খুলে ফেলে দেয়। এমকি আগে কথা বলতে পারলেও অসুস্থ্য হওয়ার পরে কথা বলার সামর্থ হরিয়ে ফেলেছে।

শিশু মোঃ কাওছার হোসেন ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কুলসুম বাগ গ্রামের অত দরিদ্র দিন মজুর মোঃ আব্দুল আজিজ ও স্ত্রী খাদিজা বেগমের ছেলে।
শিশুটির বাবা মোঃ আব্দুল আজিজ ও মা খাদিজা বেগম জানান, তার তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে কাওছার হোসেন তৃতীয় সন্তান। দিন মজুরের কাজ করে সংসার পরিচালনা করেন তিনি। সংসারে অভাব থাকলে শান্তিতে ছিলো তারা। গত ৭ বছর আগে জন্ম গ্রহণ করেন কাওছার। সুন্দর চেহারা সাথে মুখে ফুটফুটে হাসি লেগে থাকতো শিশুটির। তিন বছর বয়সেই সব কথা বলতো শিশুটি। প্রায় ৩ বছর আগে শিশুটি উঠানে খেলতে গেছে মধু পোকা কামড় দেয় তার মাথায়। পরে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলেও কোন পরিবর্তণ না হলে চট্রগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন চিকিৎসাকের কাছে গিয়ে চিকিৎসা করি। এতে প্রায় দেড় লাখ টাকার মত খরচ হয়েছে তাদের। অনেক কষ্টে বিভিন্ন মানুষ ও আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে ছেলের চিকিৎসা খরচ জোগান তারা। কিন্তু তারপরও শিশুটি সুস্থ্য হয় নেই।


তারা আরো জানান, ছেলেডা কথা কয়না। ঘরে ছাইড়া দিলে ঘরের মালামাল সব ভাইঙালায়। ঘরের থোন বাইরা অনেক দূরে চইলা যায়। জামা-কাপুর পড়াইলে ছিঁড়া খুইলালায়। যার কারণে গত তিন বছর ধইরা ছেলেডারে দরি দিয়ে বাইন্ধা রাখি। যত সময় সজাগ থাকে যত সমই দড়ি দিয়া বাই›দ্ধা রাখি। এত ছোট পোলাডারে বাই›দ্ধা রাখতে অনেক কষ্ট হয়। তারপরও কি করমু। টাকার লইগা চিকিৎসা করাতে পারিনা। ছেলেডার প্রতি মাসে ৬ হাজার টাকার ঔষুধ লাগে। কিন্তু টাকার অভাবে দুই মাস ঔষুধ খাওয়াইতে পারিনা। চট্রগ্রামের এক ডাক্তার কইছে কাওছারের ভালো চিকিৎসা করালে আবারও সুস্থ্য হইবো। এতে দুই লাখ টাকার খরচ হইবো। এতে টাকা কই পামু। কেউ যদি আমাগো গরীরের সাহায্য করে তাহইলে ছেলেডার চিকিৎসা করাইয়া সুস্থ্য করে তুলতে পারতাম। এজন্য তিনি সমাজের সকল মানুষের কাছেসহযোগীতা চেয়েছেন।


চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ আল নোমান জানান, বিষয়টি কেউ কখনও বলেনি কাছে বলেনি। এমনকি ছেলেটির বাবা-মাও কখন আমার কাছে আসেনি। তবে আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি। এবং শিশুটির চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগীতার চেষ্টা করবো।