অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ২৭শে জুন ২০২৫ | ১৩ই আষাঢ় ১৪৩২


ভোলায় ওবায়দুল হক বাবুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে টাকা ছাড়া মিলছে না নতুন বই


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৫ই জানুয়ারী ২০২০ রাত ০২:৫৫

remove_red_eye

১৭৮৪

 
 
আকতারুল ইসলাম আকাশঃ ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ওবায়দুল হক বাবুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নতুন বই বিতরণের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিনামূল্যে নতুন বই বিতরণ উৎসবের নামে টাকা আদায়ের ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
 
সংশ্লিষ্টরা জানায়, বুধবার সাত উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৫৯ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে ৩৯ লাখ ১৩ হাজার ৩৭১ টি বই বিতরণ করা হয়। কিন্তু উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ওবায়দুল হক বাবুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বই বিতরণের সময় বই পরিবহন খরচ, খেলাধুলা, বিদ্যুৎ, রেডক্রিসেন্টসহ নানা খাত দেখিয়ে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়েছে।
 
ওবায়দুল হক বাবুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ধান বিক্রি করে ৫০০ টাকা দিয়ে তার মেয়ের জন্য নতুন বই নিয়েছেন।অপর অভিভাবক কাঞ্চন মিঞা জানান, তিনি খড় বিক্রি করে টাকা জোগাড় করে তার নাতির জন্য বই নিতে এসেছেন।শিক্ষার্থীরা জানান, অন্তত ২৫ শিক্ষার্থীকে নতুন বই না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সজিব নামে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র জানান, দুইশো টাকা দিয়েছি। জুলহাস স্যার বলেছে আরো একশো টাকা দিয়ে বই নিতে। আজ চারদিন হয়েছে একশো টাকা না দিতে পারায় বই দেয়নি জুলহাস স্যার।
 
বিদ্যালয়ে সাংবাদিক আসার খবর পেয়ে জুলহাস স্যার বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের তাড়িয়ে দেন। এসময় গণমাধ্যম কর্মীরা টাকা আদায়ের রশিদ চাওয়ায় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে খারাপ আচরণ করেন তিনি।এবং গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের রশিদ হাতিয়ে নেন।
 
বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষুব্ধ একাধিক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানান, জুলহাস স্যার হিসাব বিজ্ঞানের শিক্ষক। জুলহাস স্যারের কাছে প্রাইভেট না পড়লে তিনি ফেল করিয়ে দেন। এবং এবারও নতুন বই আনতে গেলে আমাদেরকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেন।
 
শিক্ষার্থীদের চড়থাপ্পড় দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে জুলহাস স্যারের বিরুদ্ধে।বিনামূল্যের বই বিতরণের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে ওবায়দুল হক বাবুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সরোয়ার হোসেন জানান, সেশন ফ্রি নেওয়া হচ্ছে। সেশন ফ্রি ছাড়া বই দেওয়া হবেনা। যদি কেউ সেশন ফি না দিতে পারে তাহলে দরখাস্ত লিখে বই নিতে হবে এবং দরখাস্তে উল্লেখ করতে হবে সেশন ফ্রি টাকা পরে দেওয়া হবে।
 
এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জিহাদ হাসান বলেন, নতুন বই বিতরণের সাথে সেশন ফির কোন সম্পর্ক নেই। বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হবে। কোন শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীদের বই না দেয়। তাহলে অতি শীঘ্রই সেসকল শিক্ষকদের  বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো জানান, রবিবার সরেজমিন ওবায়দুল হক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ঘটনার সত্যতা যাচাই বাছাই করা হবে এবং অপরাধী শিক্ষকদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।