অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ২৭শে জুন ২০২৫ | ১৩ই আষাঢ় ১৪৩২


ঘূর্ণিঝড় শক্তি ও মন্থার প্রভাবে ভোলার সব রুটে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৯শে মে ২০২৫ বিকাল ০৩:০৫

remove_red_eye

৭৭

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক: ঘুর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে মধ্যরাত থেকে ভোলায় শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টির সাথে বইছে তীব্র বাতাস। এ কারণে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার ৫টি নৌ-রুটে লঞ্চ ও ২টি ফেরি রুটে চলাচল বন্ধ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি-এর পক্ষ থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। ভোলা নদীবন্দরের উপ-পরিচালক মো: রিয়াজ হোসেন এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘূর্ণিঝড় শক্তির কারণে সমুদ্রবন্দর এলাকায় ৩ নম্বর বিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করায় হাতিয়া-ঢাকা, ভোলা-লক্ষ্মীপুর, ভোলা-আলেকজান্ডার, ভোলা-তজুমদ্দিন-মনপুরা ও চরফ্যাশন বেতুয়া-মনপুরা রুটের সব লঞ্চ চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এছাড়াও ইলিশা ফেরি ঘাটের ব্যবস্থাপক মো: কাওসার আহমেদ খান জানিয়েছেন, বুধবার রাত থেকে ভোলার ইলিশা থেকে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরী ঘাট ও ভোলার ভেদুরিয়া থেকে বরিশালের লাহার হাট ঘাটে কোনো ফেরি ছেড়ে যায়নি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই ২টি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। এদিকে ৫টি নৌ-রুটে লঞ্চ ও ২টি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। জরুরি কাজে কেউ কেউ ঘর থেকে বের হয়ে ঘাটে গিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। উত্তাল রয়েছে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী। মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারের জেলেরা নিরাপদে কূলে ফিরে এসেছেন। সচেতনতা বৃদ্ধিতে এখন উপকূলীয় এলাকাজুড়ে মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া নিন্মচাপের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি ৪ থেকে ৫ ফুট বেড়ে যাওয়ায় জেলার কিছু কিছু জায়গায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে বিচ্ছিন্ন চর ও বাঁধের বাইরের সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। নদী তীরবর্তী মানুষ জনের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। অন্যদিকে, তজুমদ্দিন উপজেলার স্লুইসগেট এলাকায় সদ্য নির্মিত রিং বাঁধ উপচে মেঘনার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড় শক্তি ও মন্থার সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় ভোলা জেলা প্রশাসন সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

জেলা প্রশাসক মো: আজাদ জাহান "দৈনিক বাংলার কণ্ঠ" জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় ৮শ’ ৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১৪টি মাটির কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ১৩ হাজার ৮শ’ ৬০ জন সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন। তিনি আরও জানান, জেলার বিচ্ছিন্ন চরগুলো থেকে মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সাত উপজেলায় ৮টি কন্ট্রোল রুম চালু রয়েছে এবং গঠন করা হয়েছে ৯৮টি মেডিকেল টিম। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ মজুদ রয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।