অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ২৭শে জুন ২০২৫ | ১৩ই আষাঢ় ১৪৩২


কোয়েল পাখির খামার ও ডিম বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন লালমোহনের ফরিদ


লালমোহন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০শে জুন ২০২৫ রাত ০৮:৩৩

remove_red_eye

৬২

আকবর জুয়েল, লালমোহন: ৩০ বছর বয়সী যুবক মো. সাইফুল ইসলাম ফরিদ। গত ৩ মাস আগে শখের বশে ১৫শত কোয়েল পাখি নিয়ে নিজ বসতঘরের ছাদে খামার শুরু করে। তার স্বপ্ন ছিলো ডিম বিক্রি করে লাভবান হওয়া। কিন্তু ১৫শত পাখির মধ্যে বেশির ভাগই ছিল পুরুষ পাখি। মাত্র ৫শত ছিলো ডিম পাড়া পাখি। এক হাজার পুরুষ কোয়েল পাখি ৫০ টাকা দরে বিক্রি করে বাকী ৫শত ডিম পাড়া কোয়েল পাখি নিয়ে বর্তমানে তার খামার। এই খামার থেকে গত দুই মাস ধরে প্রতিদিন চারশত থেকে সাড়ে চারশত ডিম সংগ্রহ করছেন যুবক সাইফুল ইসলাম ফরিদ। প্রতি পিস ডিম খুচরা ৩ টাকা ও পাইকারী আড়াই টাকায় বিক্রি করছেন। এতে করে তার প্রতি মাসে বিক্রি হয় ৫০ হাজার টাকার ডিম। খরচ বাদে তার প্রতি মাসে আয় অন্তত ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। মো. সাইফুল ইসলাম ফরিদ ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড পাঙ্গাসিয়া এলাকার মৌলভী বাড়ির মো. মাকসুদ উল্লাহর ছেলে।
সাইফুল ইসলাম ফরিদ বলেন, গত ৩ মাস আগে অনেকটা শখের বশে ১৫শত কোয়েল পাখি নিয়ে আমাদের বসতঘরের ছাদে খামার করি। এতে আমার মোট খরচ হয় ৬০ হাজার টাকা। ১৫শ এর মধ্যে প্রায় এক হাজার পুরুষ পাখি হওয়ায় তা বিক্রি করে বাকী ৫শত পাখি নিয়ে চলছে আমার খামার। ৫শত পাখি থেকে প্রতিদিন চারশত থেকে সাড়ে চারশত ডিম পাচ্ছি। বর্তমানে খামারে পাখির সংখ্যা কম হওয়ায় প্রতিদিন যেসব ডিম হয় তা খুচরাই বিক্রি করতে পারি। এ ছাড়া বীজ ডিম প্রতি পিস ৪ টাকা এবং বাচ্চা প্রতি পিস ৮ টাকায় বিক্রি করছি। এতে করে মাসে অন্তত ৫০ হাজার টাকার ডিম বিক্রি হয়। এসব কোয়েল পাখিকে লেয়ার লেয়ার-১ নামে দানাদার খাদ্য খাওয়াই। এই খাদ্য, বিদ্যুৎ বিল এবং ওষুধ বাবৎ খামারের পেছনে আমার প্রতি মাসে ব্যয় প্রায় ৩০ হাজার টাকার মতো। খামারের অল্প সংখ্যক পাখি থেকেও প্রতিমাসে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকার মতো আয় হয়। তবে এই অল্প কোয়েলের খামারেই যেহেতু মোটামুটি ভালো আয় হচ্ছে, তাই ভেবেছি আগামী শীত আসার আগেই কোয়েলের সংখ্যা আরো বাড়িয়ে ৫ হাজারের মতো করবো। আশা করছি তখন আরো ভালো লাভবান হতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে কোয়েল পাখি ড়িম দেয়। রাত ৮টার মধ্যেই আমি সব ডিম খামার থেকে নিয়ে আসি। এছাড়া আমি কোয়েলের বাচ্চা উৎপাদন করার মেশিন ক্রয় করেছি। কেউ যদি কোয়েলের খামার করতে চায় এবং কারো যদি বীজের ডিম বা বাচ্চার দরকার হয় তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি তাদের চাহিদা মতো ডিম ও বাচ্চা দিতে পারবো।
লালমোহন উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মো. রইস উদ্দিন জানান, কোয়েলের মাংশ ও ডিম প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ, যা শরীরের জন্য উপকারী। পশু ও পাখির খামরের যেসব নতুন উদ্যোক্তা রয়েছেন আমাদের অফিস থেকে তাদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করে থাকি। এছাড়া এসব উদ্যোক্তাদের খামার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করেন আমাদের কর্মকর্তারা। তাদের পশু-পাখির কোনো ধরনের ওষুধ বা চিকিৎসা প্রয়োজন হলে তাও আমাদের উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল থেকে দেয়া হয়।